সমানুপাতিক, ব্যাস্তানুপাতিক, বর্গের সমানুপাতিক, এই টার্মগুলোর সাথে সায়েন্সের সমস্ত শিক্ষার্থীই পরিচিতি। যখন কোন বস্তু অন্য বস্তুর বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ে, তখন তাকে বলা হয় ঐ বস্তুটির সমানুপাতিক। আবার বিপরীতভাবে যদি কোন বস্তু অন্য কোন বস্তুর বৃদ্ধির সাথে সাথে কমে, তখন তাকে বলা হয় ঐ বস্তুটির ব্যাস্তানুপাতিক।
সাম্প্রতিককালে কুরবানীর ঈদের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে হাটের সংখ্যা ও মণ্ডপের সংখ্যার তুলনা করে সেটাই মনে হল। যেমন-
ঢাকা শহরে কুরবানীর হাটের সংখ্যা ২০টি, মণ্ডপের সংখ্যা ২০০টি।
চট্টগ্রামে কুরবানীর হাটের সংখ্যা ৮টি, ওদিকে মণ্ডপের সংখ্যা ৩০০টি!
কুমিল্লা সিটিতে জবাইয়ের সরকারি স্পট ১৪৯টি, মণ্ডপের সংখ্যা ৭০০টিরও উপরে!
অর্থাৎ আপনি স্বীকার না করলেও, হিন্দুদের মণ্ডপের সংখ্যার সাথে মুসলমানদের হাটের সংখ্যার অবশ্যই একটি ব্যাস্তানুপাতিক সম্পর্ক রয়েছে। হিন্দুদের মণ্ডপের সংখ্যা যতো বাড়বে, মুসলমানদের হাটের সংখ্যা কিংবা ঈদগাহের সংখ্যা ততো কমতে হবে। হিন্দুদের পূজার সুযোগসুবিধা যতো বাড়বে, মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার ততো কমতে হবে।
কয়েকমাস আগে হিন্দুরা যে গেণ্ডারিয়ায় কাপড়িয়া জামে মসজিদ ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করেছিল, তা হয়তো আপনারা ভুলে যাননি। ফেসবুকে যে সমস্ত ভিডিও তখন ছাড়া হয়েছিল, তাতে গেণ্ডারিয়ার মুসলমানরা সবাই বলেছিল যে তাদের এলাকায় হিন্দুরা অনেক শব্দ করে পূজা করে, মাত্র সাত ঘর হিন্দুর জন্য ৫টি মন্দির তাদের। কিন্তু কখনোই তাদেরকে কিছু বলা হয়নি। আমরা হিন্দুদেরকে এতোটা ছাড় দেই, এতোটা সুবিধা দেই, তারপরও হিন্দুরা আমাদের মসজিদ ভাঙতে চায়, এটাই ছিল গেণ্ডারিয়াবাসীর আক্ষেপ।
এখানে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে, গেণ্ডারিয়ার মন্দির-মণ্ডপের সংখ্যাধিক্যই মসজিদের উপর আঘাতের মূল কারণ। মণ্ডপের সংখ্যা কম হলে হিন্দুদের বাড়াবাড়িও কম হতো, সেক্ষেত্রে মসজিদের উপর আঘাতও আসতো না। আপনারা বাঙালি মুসলমানরা হিন্দুদের গর্দানে অনেক বেশি চর্বি জমিয়ে ফেলেছেন, এ কারণে এখন কুরবানীর হাটের সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়। কুরবানীর স্পট নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। জবাইকারীর বয়স বেঁধে দেয়া হয়। আপনারা হিন্দুয়ানী আগাছাকে বাধাহীনভাবে বাড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, এজন্য আপনাদের সত্য দ্বীন ইসলামকে আজ বাংলাদেশে বনসাইয়ের মতো ক্ষুদ্র করে রাখা হচ্ছে, আপনাদের হাত পা আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলা হচ্ছে।
আপনারা মুসলমানরা আসলে বাস্তবসম্মত চিন্তা করতে পারেন না, আর বাস্তবসম্মত কথাকে আপনারা ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বলে থাকেন। বর্তমান সময়ে বাস্তবসম্মত কথা হলো, বাংলাদেশে মুসলমানদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে এখন ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা’র জোর খাটিয়ে হলেও হিন্দুদের মণ্ডপ-মন্দিরের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। আপনি যদি মনে করেন যে, হিন্দুদের মণ্ডপের সংখ্যা বাড়লেও আপনার মসজিদের উপর আঘাত আসবে না, তাহলে আপনি ভুলের সাগরে ডুবে রয়েছেন।