Pages

হিন্দুদের উপকার করা ও রাগীব আলীর পরিণতি

১) আমি পংকজ কুমার গুপ্ত অত্র দলিল দাতা দেবতার একমাত্র পরিচালক বটে এবং আমারই তত্ত্বাবধানে পুজার্চ্চনাদি নির্ব্বাহ হইয়া আসিতেছে

২) নিত্য প্রয়োজনীয় বহুতর জিনিসপত্রাদি সংগ্রহ করার একান্ত আবশ্যক বোধ ও উন্নতিমূলক জরুরী কাজে ব্যয় সংকুলানার্থে ও চায়ের মূল্য অত্যন্ত কমে যাওয়ায় অর্থের নিতান্ত প্রয়োজন দেখা দেওয়ায় বর্তমানে দুর্দশাগ্রস্থ দুর্দিনে অর্থ সংগ্রহের জন্য কোন সংস্থান না থাকায় আমি সেবাইত স্বরূপ পরিবারস্থ অন্যান্য সেবাইতের সঙ্গে পরামর্শ করত ও অনুমতিতে নিম্ন তপশীল বর্ণিত ভূমি বিক্রয় করিয়া অর্থ সংগ্রহ স্থির করিয়াছি

উপরে যে দুটি পয়েন্ট উল্লেখিত হয়েছে, তা দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি করার কারণ দর্শিয়ে পংকজ কুমার গুপ্তের নিজস্ব বক্তব্য, যা লেখা রয়েছে খোদ জমি বিক্রির দলিলেই। দলিলের ভাষা শুনে যে কেউ বুঝতে পারবেন, রীতিমতো মুসলমানদের হাতে-পায়ে ধরে, ‘অর্থের নিতান্ত প্রয়োজন’ ও ‘দুর্দশাগ্রস্থ দুর্দিন’ এর দোহাই দিয়ে অনুনয় বিনয় করেই পঙ্কজ কুমার গুপ্ত তার জমি মুসলমানদের দিয়ে কিনিয়েছে।
দলিলের পিডিএফের ৫ নং পৃষ্ঠায় দেখুন: http://goo.gl/u5hesC
যারা তারাপুর চা বাগানকে কেন্দ্র করে রাগীব আলীকে ‘জালিয়াত’ বলছেন, তারা দলিলে ‘চা’ নিয়ে কী বলা আছে তা খেয়াল করুন। দলিলে পঙ্কজ নিজেই স্বীকার করেছে যে, সে চা বিক্রি করে অর্থ কামাতে পারছিল না। অর্থাৎ চা বাগান কিনে নিয়ে রাগীব আলী আসলে পঙ্কজের উপকারই করেছিল, যার প্রতিদানে তাকে এখন ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এর দায় নিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। রাগীব আলীর সাথে অনেকটাই মিল রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই খন্দকার মোশাররফের ঘটনাটির, যে অরুণ গুহ মজুমদার নামক এক হিন্দুর কাকুতি-মিনতিতে বাধ্য হয়ে তার জমি কিনেছিল। অরুণ গুহ মজুমদারের উকিল সুবল চন্দ্র সাহা যখন বারবার অনুরোধ করতে থাকে তার মক্কেলের জমিটা কেনার জন্য, তখন খন্দকার মোশাররফ বলেছিল, “সুবল, আমার ফরিদপুর শহরে পারিবারিক ও ক্রয় সূত্রে যথেষ্ট ভূসম্পত্তি রয়েছে। নতুন করে জমির তো আমার প্রয়োজন নেই। তুমি বরং অন্য কোনো ক্রেতার সন্ধান করো।”

কিন্তু তারপরও অরুণ গুহ মজুমদার কাকুতি-মিনতি করতে থাকে, “আমার টাকার প্রয়োজন। অন্য কেউ জমিটি কিনলে আমি শান্তি পাবো না।”

জমি কেনার পর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্ত মানববন্ধন ও মিছিল-মিটিং করে দাবি করতে থাকে, খন্দকার মোশাররফ নাকি জোর করেই জমিটা দখল করে নিয়েছে। তা নিয়ে ঐ সুবল চন্দ্র সাহার একটি লেখা প্রকাশিত হয় ’সংখ্যালঘুর সম্পত্তি কেনা কি দোষের?’ এই প্রশ্ন রেখে। http://goo.gl/LmQBtK

আসলেই তো, হিন্দুর উপকার করাটাই হলো দোষের। হিন্দুর মায়াকান্নায় ভুলে যে মুসলমান তার উপকার করে, সেই মুসলমানকেই হিন্দুরা ‘জালিয়াত’ অপবাদ দিয়ে তার সম্মানহানি করে। খন্দকার মোশাররফ মন্ত্রী হওয়ার কারণে হয়তো তাকে দেশত্যাগ করতে হয়নি, কিন্তু রাগীব আলীকে হিন্দুদের মামলার ফাঁদে পড়ে দেশত্যাগ করতে হয়েছে যেহেতু তার রাজনৈতিক ক্ষমতা নেই। কিন্তু উভয়ের ইমেজই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এর দায়ে, যা তারা লাভ করেছে হিন্দুদের উপকার করার বিনিময়ে। পবিত্র কুরআন শরীফে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে প্রথমত ইহুদীদের, অতঃপর মুশরিকদের। (সূরা মায়িদা: আয়াত শরীফ ৮২) যাদেরকে স্বয়ং আল্লাহ পাক শত্রু বলে সাব্যস্ত করলেন, তাদের উপকার করলে ক্রিমিনালের তকমা বহন করতে হবে এটাই তো স্বাভাবিক। মুসলমানদের হিন্দুপ্রীতির এটাই হলো পরিণতি।