হাসপাতালে বা আই সি
ইউ তে দীর্ঘদিন চিকিৎসার
পর কিংবা হঠাৎ সড়ক
দুর্ঘটনা, কার্ডিয়াক এরেস্ট বা অন্য
কোন কারনে আপনার কোন
স্বজন মৃত্যু বরন করলো। চিকিৎসক
তাকে ভালো করে দেখলেন,
যথাসম্ভব আপনাকে সান্তনা দিয়ে
একটা ডেথ সার্টিফিকেট লিখে
দিলেন। আপনি
সেটা নিয়ে বাড়ী ফেরলেন। শেষ
অনুস্টান করতে যেয়েই আপনি
লক্ষ্য করলেন আপনার মৃত
স্বজন হঠাৎ নড়ে চড়ে
উঠলেন! চারিদিকে হুলোস্থুল কারবার। কবর
থেকে জীবন্ত লাশ টিকে
নিয়ে আবার ছুটাছুটি।
আবার হাসপাতালে ছুটলেন। প্রথমে
একহাত নিলেন ডাক্তার কে। তার
পর আবার পরীক্ষা নিরীক্ষা। ই
সি জি, ইকো।
না তিনি মৃত।
তবে কেন তিনি কবরে
বা শ্মশান ঘাঠে নড়ে
উঠলেন। আর
যদি ডাক্তারের পুনঃ প্রচেষ্টায় আবার
জীবন পান তবে কেন
দীর্ঘ সময় তার দেহে
প্রানের অস্তিত্ব ছিলোনা। কি
ঘঠে ছিলো তার দেহে। কি
এর ব্যাখ্যা।
এ ধরনের ঘঠনা
একেবারেই বিরল। সম্প্রতি
বাংলাদেশে এ ধরনের একটি
ঘঠনা ঘঠেছে। একটি
নবজাতক (প্রি ম্যাচিউর) কে
ডেলিভারি করানোর পর অনেক
চেষ্টা করে ডাক্তার রা
তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু
কবর দিতে গিয়ে দেখা
গেলো সেই প্রে-ম্যাচিউর
এন্ড প্রি-টার্ম বেবী
কান্নাকাটি করছে। পরে
হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকার একটি
হাসপাতালে আনা হয়।
শেষ পর্যন্ত জানা যায় যে শিশুটি মারা গিয়েছে!
মেডিকেল সায়েন্সে এই ধরনের ঘঠনা
কে বলা হয় "লেজারাস
ফেনমেনন (Lazarus
phenomenon) বা "লেজারাস সিমটম" (Lazarus symptom)। যিশু
খ্রীস্ট সেন্ট লেজারাস নামের
এক ব্যক্তি কে তার মৃত্যুর
চার দিন পর পুনরায়
তাকে জীবিত করেন।
পরে লেজারাস কে পবিত্র আত্মার
অধিকারী ধরা হয়।
পবিত্র বাইবেলের ১১তম খন্ডে এ
ব্যাপারে বর্ণনা আছে।
সেখান থেকেই এই "লেজারাস"
নামের উৎস।
সৎকার কাজের সময়
কোন মৃতের জেগে উঠাকে
বলা হয় "লেজারাস ফেনোমেনন" (Lazarus
phenomenon) পৃথিবী তে তে এ
ধরনের ঘটনার উদাহরণ খুবই
কম। তিরিশ
কি পঁয়ত্রিশ। সবই
ইউরোপ, আমেরিকায়। সুস্থ
হয়ে পুনরায় বেচেছিলেন মাত্র
দু'এক জন তাও
প্রচন্ড ডিজ এবিলিটি নিয়ে।
"লেজারাস ফেনোমেনন" এর কারন ব্যাখ্যা
করা কঠিন । তবে
ধরা হয়, পি.ই.ই. পি (P E E P) বা
পজিটিভ এন্ড এক্সপিরেটরি প্রেশার
(সি পি আর দেবার
সময় ফুসফুসের ভিতর জমে থাকা
অত্যাধিক বহিঃমূখি বায়ুর চাপ), মায়োকার্ডিয়াল
স্টানিং (MYOCARDIAL
STUNNING) হার্টের কিছু অংশ সাময়িক
কাজ না করা, ট্রানজিয়েন্ট
এসিস্টল (TRANSIENT ASYSTOLE)
সাময়িক ভাবে হার্ট বন্ধ
থাকা, পি. ই.এ
(P E A) পালস লেস ইলেক্ট্রিক্যাল একটিভিটি,
হাইপার কেলিমিয়া (HYPERKALAEMIA) অতিরিক্ত ইন্ট্রা সেলুলার পটাসিয়াম, ডিলেইড একশন অব
ড্রাগ (DELAYED ACTION OF
DRUG) অর্থাৎ শেষ মুহুর্তে ডাক্তার
জীবন রক্ষাকারী যে ঔষধ পুশ
করেছিলেন তা দেহে কাজ
করতে দেরী হওয়া ইত্যাদির
ফলেই এমন দৈবিক ঘটনার
সুত্রপাত হয়।
নিউরো সাইন্টিস্ট দের
ভাষায় এমন ঘটনায় বেচে
যাওয়া মানুষ টির প্রচণ্ড
রকমের নিউরোলজিক্যাল সহ অন্যান্য প্রবলেম
থাকা খুবই স্বাভাবিক।
এম বি বি
এস ( ডি এম সি), এম ফিল (নিউরো
-সাইকিয়াট্রি)
কনসালটেন্ট নিউরো -সাইকিয়াট্রিস্ট।
বিঃদ্রঃ আমাদের পোষ্ট গুলো
যদি আপনার ভাল লাগে
তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে
জানাবেন। তাহলে
আর ভাল পোষ্ট নিয়ে
হাজির হব।