Pages

মোটাতাজা গরুর গোস্ত ক্ষতিকর নয়

কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের প্রধান ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. এ বি এম শহিদুল্লাহ বলেছেন- ওষুধের মাধ্যমে মোটাতাজাকৃত গরুর গোস্ত খেলে মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না।

তিনি বলেন, মোটাতাজা করা গরুর গোস্ত খেলে ক্ষতি হবে বলে যারা প্রচার করছেন তারা এ বিষয়ে কোনো গবেষণা ছাড়াই বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তারা কোনো গবেষণামূলক প্রমাণ দেখাতে পারেননি। আমরা অনেক গবেষণা করে দেখেছি এতে মানুষের কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই।

বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খাইয়ে মোটাতাজা করা গরুর গোস্ত খাওয়া মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কারণ, গোস্ত খাওয়ার মাধ্যমে স্টেরয়েডজাতীয় উপাদান মানবদেহে ঢুকে পড়লে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
কোরবানি ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পর ডা. শহিদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে ২০১২ সালে ইতালির বায়োমেড সেন্ট্রাল ভেটেরিনারি গবেষণা প্রতিবেদন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, কৃষি ও খাদ্য সংস্থা, ওষুধ ও খাদ্য সংস্থা এবং অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এসব সংস্থাও বিভিন্ন সময়ে তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে যে, হরমোনে মোটাতাজা করা গরুর গোস্ত খেলে কোনো ক্ষতি হবে না।

ডা. শহিদুল্লাহ বলেন, একটি গরুকে যে পরিমাণ ডেক্সামেথাসোন, ডেক্সাভেট কিংবা স্টেরয়েড খাওয়ানো হয় তার মাত্র বিশ ভাগের এক ভাগ গরুর শরীরে থাকে। বাকিটা ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই অপসারণ হয়ে যায়। সমপরিমাণ স্টেরয়েড হরমোন একটা ডিমের মধ্যেও থাকে।

এছাড়া সয়াবিন, ব্রোকলি, ক্যাবেজসহ অন্যান্য শাকসব্জিতেও সব ধরনের হরমোন থাকে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সে হিসাবে গরুর গোস্ত ছাড়াই তো মানুষ প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে হরমোন খেয়ে থাকে।

ডা. শহিদুল্লাহ বলেন, একটি গরুতে যদি ৮০ কেজি গোস্ত হয় তাহলে ওই এক ভাগ হরমোন ৮০ কেজি গোস্ত সমভাবে থাকবে। আর এর সামান্য পরিমাণ গোস্ত ই একেকজন মানুষ খাবে।

সাধারণত অ্যাজমা, এলার্জি, বাতজনিত রোগসহ বেশ কয়েকটি রোগের উপশম হিসেবেও এসব ওষুধ ব্যবহার হয়ে থাকে উল্লেখ করে এগুলো ক্ষতিকর নয় বলে দাবি করেন তিনি। তিনি জানান, সাধারণত এসব ওষুধ খাওয়ালে ২০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে গরুর ওজন ২০-৩০ কেজি বেড়ে যায়। এতে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয় না বলে নিশ্চিত করেন এই পশু চিকিৎসক। তবে ক্ষতি না হলেও পশুকে এসব ওষুধ না খাওয়ানোর জন্য খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডা. শহিদুল্লাহ।

ক্ষতি না হলে ২০১০ সালে প্রাণি অধিদপ্তর এসব ওষুধ আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই ওষুধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর বাংলাদেশ তা করেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ও অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগ ইইউ এই নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেনি।
Reference by: News Paper, News Paper