কাতার এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশী এক ভাই শেফের চাকরি করতেন। তার গাইড অফিসার ছিল ইন্ডিয়ান। সেই ইন্ডিয়ান তাকে এতো মেন্টালি টর্চার করত যে, একপর্যায়ে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সেখানে ভারতীয়রা খুবই একতাবদ্ধ, যার কারণে তারা হাজার অপকর্ম করলেও কিছু হতো না।
প্রতিদিনই কোন না কোন ভারতীয় সেখানে বিভিন্নরকম অপরাধে ধরা পড়ত, টাকা-পয়সা রিলেটেড বা চুরির ঘটনায়। ভারতীয়দের এসব অপকর্ম কাতার এয়ারলাইন্সে চাকরি করা অন্যরা কেবলি দেখত, পাকিস্তানী বাংলাদেশী সবাই। কিন্তু কেউ কিছু বলত না। একদিন ঘটনাক্রমে এক বাংলাদেশী খ্রিস্টান ধরা পড়ল চুরির দায়ে। সাথে সাথে কাতার এয়ারলাইন্সে কর্মরত সব ভারতীয় একযোগে অফিসে প্রচার করতে লাগল যে- বাংলাদেশীরা চোর, বাংলাদেশীরা চোর। তারা কাতারে এসেছে কেবল চুরি করার জন্য। অর্থাৎ চুরি করাটা ততক্ষণ দোষের হবে না, যতক্ষণ না কেউ তাকে চোর না বলছে। এখানে বলাটাই হলো আসল। আমার সেই ভাই আক্ষেপ করে বলছিলেন, আমরা না কিছু বলতে পারি না। আমরা চুপ করে থাকি।
এটাই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, যে তারা বিধর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু বলে না, বোবা হয়ে থাকে। অনেকের ধারণা থাকতে পারে যে, মিসাইল, বিমান এগুলো বোধহয় বড় অস্ত্র, কিন্তু না। মানুষের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো তার জিহবাটা। এই জিহবা শুধু মুখের ভেতরেই থাকে না, সংবাদপত্র, ফেসবুক থেকে শুরু করে তাবৎ মিডিয়ার মধ্যেই থাকে। এই জিহবা ব্যবহার করতে না পারলে নিজ দেশেও পরাধীন হয়ে যেতে হয়।
বাংলাদেশে বর্তমানে হিন্দুদের যে ক্ষমতা, তার মূল কারণ তারা কথা বলে, তারা মুসলমানদের মতো চুপ করে থাকে না। পান থেকে চুন খসলেই এদেশের হিন্দুরা ফোঁস করে উঠে। বিপরীতে সিলেটে যে বর্তমানে মুসলমানরা মার খাচ্ছে, এর মূল কারণ তারা চুপ করে রয়েছে। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, তারাপুর চা বাগান দখল করেছে হিন্দুরা, ঠিক সেভাবেই তারাপুর চা বাগান রক্ষা কমিটিতেও সামনের সারিতে রয়েছে হিন্দুরা!
সংগঠনের এক মুসলমান নামধারী নেতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনারা হিন্দুদের বিরুদ্ধে কিছু বলছেন না কেন? উত্তর সে বলেছিল, “আমরা আমাদের ‘হিন্দু ভাই’দের ছাড়া বাঁচব কিভাবে?” চিন্তা করুন পাঠকেরা, হিন্দুরা জমি কেড়ে নিচ্ছে, তারপরও তারাপুরের বাসিন্দারা হিন্দুর প্রেমে মাতোয়ারা! গত জুমার দিনে সিলেটের ইসকন মন্দিরের গেরুয়া সন্ত্রাসীরা মসজিদে বন্দুক দিয়ে গুলি করলো, কিন্তু সেখানকার স্থানীয় মুসলমানরা এখন পর্যন্ত বোবা হয়ে রয়েছে। ‘হিন্দু ভাই’রা যদি গায়ে গুলি করে সুখ পায়, তাতেও সিলেটের মুসলমানদের শান্তি!
যেখানে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, সেখানে বর্তমানে সিলেটের মুসলমানরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে কথাটা পর্যন্ত বলতে চায় না। শুধু সিলেট নয়, সারা বাংলাদেশের মুসলমানদেরই আজ সেম সমস্যা যে, তারা বোবা হয়ে রয়েছে।