Pages

বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রীর উপহার নিলেন সেই দরিদ্র মাঝি!

ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বাসিন্দা ধন মাঝির কথা মনে আছে কি? আগস্ট মাসে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে ১০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি। পাশে চোখ মুছতে মুছতে হাঁটছিল তার মেয়ে। সেদিন রাজ্যের হান্ডির হাসপাতাল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে মৃত স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোন গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেননি তিনি। অনেক অনু্রোধেও গাড়ি দেয়নি হাসপাতাল।

প্রায় দশ কিলোমিটার মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে হাঁটার পরে এক স্থানীয় টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক তাকে দেখতে পান। তিনিই জেলাশাসকের কাছে ফোন করে গাড়ি আনাবার ব্যবস্থা করেন। সেই ধন মাঝি আবারও সংবাদে।
তার দুর্দশার খবর সংবাদপত্রে পড়ে জানতে পারেন বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ইশা আল খলিফা। ধন মাঝির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন খলিফা। দিল্লির বাহরাইন দূতাবাসে পৌছয় রাজার পাঠানো প্রায় ৯ লক্ষ টাকার চেক। সেই চেক নিতেই বৃহস্পতিবার জীবনে প্রথমবার বিমানে চেপে দিল্লি গিয়েছিলেন ধন মাঝি।

এর আগে বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রীও অর্থ সহায়তা করেছেন। ওড়িশার কয়েকজন বিধায়কও তার হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন। সাহায্য এসেছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকেও। রাজধানী ভুবনেশ্বরে আদিবাসী শিশুদের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব নিয়েছে তার তিন মেয়ের আজীবন পড়াশোনার। মেয়েদের সেই স্কুলে ভর্তি করে দিয়েই দিল্লির বিমান ধরেন তিনি। রাজার চেক নিতে যাওয়ার সময়েও তার পরনে ছিল নীল লুঙ্গি আর একটা পুরনো জামা। কাঁধে গামছা।
বাহরাইন দূতাবাসে সংবাদ মাধ্যমকে ধন মাঝি নীল রঙের চেকটা দেখান। ব্যাংক অফ বাহরাইন অ্যান্ড কুয়েতের ওই চেকে লেখা টাকার অংকটা ৮,৮৭,৯৪৯।

সংবাদ মাধ্যমকে ধন মাঝি বলেন, এই সব টাকাই তিনি ব্যাংকে দীর্ঘমেয়াদী আমানত হিসাবে রেখে দেবেন, যাতে তার মেয়েদের পড়াশোনার জন্য খরচ করতে পারেন। তার মেয়েদের পুলিশ বা ডাক্তার করার ইচ্ছা ধন মাঝির।

সূত্র: বিবিসি