আমেরিকায় বাচ্চাদের স্কুলে যেসব ছুটি দেয়া হয়, সেগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘ডিয়ার হান্টিং সিজন’ এর ছুটি। ঐ সময় আমেরিকার বাচ্চারা পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের সাথে বন্দুক হাতে জঙ্গলে চলে যায়, নিজ হাতে গুলি চালিয়ে হরিণ শিকার করে। হরিণ শিকার করার রঙিন শিশুতোষ বইও বিক্রি হয় সেদেশের বাজারে, আমাজন ডট কমেও সেসব বই বিক্রি হয়। (https://goo.gl/Gs6fFn)
আমেরিকার এই যে বন্দুক সংস্কৃতি, তার কারণে সেদেশে বছরে মারা যায় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ, পঙ্গু, হয় ৮০ হাজারেরও বেশি। কিন্তু তারপরও আমেরিকা কিন্তু তার জনগণের হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নিবেনা, কারণ সে জানে বন্দুক কেড়ে নিলেই তার জনগণ হয়ে পড়বে ‘ডি-মরালাইজড’।
বিপরীতে আমাদের দেশের সরকার আইন করেছে ১৮ বছরের নীচে কুরবানী করা যাবে না। কারণ বাচ্চাদের থেকে কুরবানীর ছুরি কেড়ে নিলে সে বড় হয়ে ডি-মরালাইজড হবে, সে মানসিকভাবে দুর্বল হবে। ইসলাম থেকে সে আস্তে আস্তে দূরে সরে যাবে, বিধর্মীদের সামনে সে নতজানু হবে।
আমাদের জাতি যে ডি-মরালাইজড, তার প্রমাণ পাওয়া যায় সাম্প্রতিককালের ভারতীয় হাতিটির ঘটনায়। একজন ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন যে, হাতিটি এমন কী করলো যে তাকে ‘বঙ্গবাহাদুর’ উপাধি দেয়া হলো? এর উত্তর হলো, হাতিটি ধরা পড়ার আগপর্যন্ত একাধিক জেলা ও ইউনিয়নের শত শত বিঘা জমির ফসল নষ্ট করেছে, শত শত ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলেছে। অনেক বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ফেলেছে। আর্থিক ক্ষতির হিসাব করলে তা কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এটাই হলো হাতিটার বাহাদুরি, বঙ্গদেশে প্রবেশ করে সে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পেরেছে বলেই সে হলো ‘বঙ্গবাহাদুর’!
এখন সামান্য ভারতীয় হাতির ক্ষেত্রেই যদি এই অবস্থা হয়, সেক্ষেত্রে ভারতীয় সৈন্য প্রবেশ করলে কী হবে? ভারতীয় সৈন্যরা যখন এদেশে তাণ্ডব চালাবে, তখন তাদেরকেও ‘বঙ্গবাহাদুর’ উপাধি দিয়ে বরণ করা হবে না তো? আসলে আমাদের দেশে এখন যা হচ্ছে, তার প্রত্যেকটির পেছনে রয়েছে এই ‘ডি-মরালাইজেশন’ এর উদ্দেশ্য। যার সোজা বাংলা হলো ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া, ইসলাম নিয়ে মানুষের মধ্যে হীনম্মন্যতা ঢুকিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া।
এখানে শুধু সরকারকে দোষ দিলে চলবে না, কারণ সাধারণ মানুষ কী চায় তার সন্তানদের দৃঢ়চেতা হিসেবে গড়ে তুলতে? গুলশান হামলার পর এদেশে সরকারের নির্দেশ ছাড়াই বাড়িওয়ালারা ব্যাচেলরদের বের করে দিয়েছিল।,গত রোজার মাসে ভারতীয় ভিসা নিতে রাত বারোটা থেকে লাইন ধরেছিল যারা, তারা তো সাধারণ মানুষই।
কিন্তু যখন ভার্সিটিতে ৭% ভ্যাট বসানোর চেষ্টা করা হয়, তখন তো সাধারণ মানুষ ‘ডি-মরালাইজড’ হয় না। তখন তো সে এরকম ন্যাকা ন্যাকা ভাব দেখায় না, পশুপ্রেমী সুশীল সাজতে যায় না। তখন সে ঠিকই রাস্তা আটকে গোটা ঢাকা শহর অচল করে দেয়।